The life of Brahmachari Mural Bhai has undergone a radical transformation since his childhood. There is a vast difference in his personality, religious inclination, and approach to life today compared to his earlier years.
He was born on January 1, 1945, in Calcutta. His education continued in what was then East Pakistan (now Bangladesh). He completed his S.F. Examination in 1964 from Kalipur High School, followed by the I.Sc. Examination in 1966 from Satkania College. He earned a B.Sc. in 1968 from Sir Asutosh College and completed his M.Sc. in Applied Physics from Rajshahi University in 1970.
Mural Bhai comes from a well-to-do family in Chittagong, Bangladesh. His father was a military officer, and his mother, a devout homemaker, played a pivotal role in his upbringing. Losing his father at a young age, he was raised by his mother, whose virtues and resilience left a lasting impact on him. As a young widow, she devoted her life to the well-being of her three children — two sons and a daughter — navigating hardships with grace and dedication.
In 1970, during a visit to Adyapeath, Dakshineswar, Mural Bhai was deeply moved by the orphan children and the teachings of Sri Sri Annada Thakur, the institution’s founder. This encounter inspired him to dedicate his life to the welfare of children. His spiritual inclination since childhood found its ultimate path at Adyapeath, where he began his monastic life at the age of 25. For the past 42 years, he has faithfully served the institution. His sincerity, honesty, and dedication earned him the position of General Secretary of the trust, “Dakshineswar Ramkrishna Sangha,” in 1984.
Choosing a life of renunciation under the guidance of his spiritual mentor, Sree Sree Annada Thakur, Mural Bhai devoted himself entirely to serving the distressed. He never returned to his native land, nor did he claim any worldly possessions, including his family home or educational certificates, which held no relevance to his life as a monk.
In 1971, the Bangladesh Liberation War between East and West Pakistan brought tragedy to his family. His house in Chittagong was destroyed by soldiers from the Punjab and Baluch regiments, along with many Hindu-owned properties. All his educational records were lost, but Mural Bhai felt no need to retrieve them, fully embracing his new life of spiritual service.
Under his leadership, the organization witnessed transformative changes. The increasing scope of activities led to the establishment of a new trust, Dakshineswar Ramkrishna Sangha Adyapeath, which expanded its social work worldwide. Through his efforts, the organization set up branches globally, including in New York, USA, and various locations across India, such as Haridwar, Rishikesh, Gaya, Vrindavan, Varanasi, and several centers throughout West Bengal.
As General Secretary, Mural Bhai is revered for his honesty, dedication, and tireless service. His followers, known as Bhai, and devotees of the Adyapeath Temple, both in India and abroad, hold him in high esteem for his philanthropic and spiritual work. Beyond religious activities, Mural Bhai has propagated humanism, earning him recognition as a Karmayogi — a believer and practitioner of the philosophy of Karma Yoga.
He received initiation from Swami Bireswarananda Maharaj, a disciple of Holy Mother Sri Sarada Devi and the 10th President of the Ramakrishna Mission, Belur Math. Guided by these teachings, Mural Bhai advanced spiritually and engaged in propagating humanism. As a representative of India, he delivered lectures at Toynbee Hall in London and at the Vivekananda Festival 2000, organized by the Vivekananda Human Centre, UK. He has also promoted humanism in Bangladesh, establishing branches of the organization and setting up a hospital in Chittagong with support from his devotees.
Mural Bhai has traveled extensively, visiting countries such as the USA, UK, Canada, France, and Scotland, delivering lectures on humanism and earning the admiration of distinguished individuals worldwide. His lectures on Swami Vivekananda’s philosophy and education have been welcomed by institutions like Ramakrishna Mission Vidyamandir (Belur Math), Ramakrishna Mission Rahara, and Ramakrishna Mission Sarisha. He also addressed audiences on national integrity at Ramakrishna Mission Purulia during Janmashtami celebrations.
Throughout his life, Mural Bhai has received numerous awards and honors from various religious and social organizations. The Siddhartha United Social Welfare Mission of Buddhism recognized his contributions to rehabilitating marginalized communities. He has also been honored by the Chandranath-Kanchannath-Adinath Pilgrimage Committee and the Sitakundu Shrine Committee in Chittagong. Several newspapers, including Barta Bahak (Kalyani, Nadia) and Biplabi Sanbad Darpan (Midnapore), have acknowledged his social contributions, with the latter awarding him at the Press Club, Kolkata. Recently, he was honored with the Seva Ratna Award by the Dakshin Kolkata Seva Utsav for his outstanding philanthropic work.
Numerous articles in Indian, Bangladeshi, and international publications have highlighted his spiritual journey and humanitarian contributions, making him a respected figure worldwide.
ব্রহ্মচারী মুরল ভাই: সেবায় ও আধ্যাত্মিকতায় পূর্ণ এক জীবন
ব্রহ্মচারী মুরল ভাইয়ের জীবন শৈশব থেকেই এক আমূল পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে। তার ব্যক্তিত্ব, ধর্মীয় ঝোঁক এবং জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিতে আজ যা আমরা দেখি, তার প্রাথমিক বছরগুলোর তুলনায় ব্যাপক পার্থক্য এসেছে।
তিনি ১৯৪৫ সালের ১লা জানুয়ারি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পড়াশোনা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ)-এ চলতে থাকে। তিনি ১৯৬৪ সালে কালিপুর হাইস্কুল থেকে S.F. পরীক্ষা, ১৯৬৬ সালে সাতকানিয়া কলেজ থেকে I.Sc. পরীক্ষা পাশ করেন। এরপর ১৯৬৮ সালে স্যার আশুতোষ কলেজ থেকে B.Sc. এবং ১৯৭০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাপ্লায়েড ফিজিক্স-এ M.Sc. ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
মুরল ভাই বাংলাদেশের চট্টগ্রামের একটি সচ্ছল পরিবার থেকে এসেছেন। তার বাবা ছিলেন একজন সামরিক কর্মকর্তা এবং মা একজন ধার্মিক গৃহিণী, যিনি তার সন্তানদের লালন-পালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ছোটবেলায় বাবা হারানোর পর তিনি মায়ের তত্ত্বাবধানে বড় হন। মায়ের দৃঢ়তা ও নৈতিকতা তার উপর গভীর প্রভাব ফেলে। তার মা বিধবা হওয়ার পর সমস্ত জীবন সন্তানদের উন্নতির জন্য উৎসর্গ করেন এবং কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করে তাদের মানুষ করেন।
১৯৭০ সালে, আদ্যাপীঠ, দক্ষিণেশ্বর ভ্রমণের সময় মুরল ভাই অনাথ শিশুদের জীবন দেখে এবং প্রতিষ্ঠাতা শ্রী শ্রী অন্নদা ঠাকুরের শিক্ষায় গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হন। এই সাক্ষাৎকার তাকে শিশুদের কল্যাণে তার জীবন উৎসর্গ করতে অনুপ্রাণিত করে। শৈশব থেকেই তার মধ্যে আধ্যাত্মিক ঝোঁক ছিল, যা শেষ পর্যন্ত আদ্যাপীঠে এসে পূর্ণতা পায়। মাত্র ২৫ বছর বয়সে তিনি সন্ন্যাস জীবন শুরু করেন এবং গত ৪২ বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে এই প্রতিষ্ঠানকে সেবা করে আসছেন। তার সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার জন্য ১৯৮৪ সালে তাকে প্রতিষ্ঠানের সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ করা হয়।
সত্যের পথে জীবনযাপন করে এবং তার গুরুপিতা শ্রী শ্রী অন্নদা ঠাকুরের আদর্শে চলতে গিয়ে, মুরল ভাই নিজেকে distressed মানুষের সেবায় উৎসর্গ করেন। তিনি কখনো নিজের জন্মভূমিতে ফিরে যাননি এবং পার্থিব কোনো সম্পত্তি, বাড়ি বা শিক্ষাগত সনদপত্রকেও আর মূল্য দেননি।
১৯৭১ সালে, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময়, চট্টগ্রামে তার বাড়ি পাঞ্জাব ও বালুচ রেজিমেন্টের সৈন্যদের হাতে ধ্বংস হয়ে যায়। অনেক হিন্দু পরিবারের বাড়ি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। তার শিক্ষাগত নথিপত্রও সেই ধ্বংসযজ্ঞে হারিয়ে যায়, কিন্তু মুরল ভাই এগুলো পুনরুদ্ধারের কোনো প্রয়োজন বোধ করেননি।
তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক উন্নতি সাধন করে এবং কাজের পরিধি বাড়ার সাথে সাথে নতুন ট্রাস্ট “দক্ষিণেশ্বর রামকৃষ্ণ সংঘ আদ্যাপীঠ” প্রতিষ্ঠা করা হয়, যা বিশ্বজুড়ে সমাজসেবামূলক কাজ শুরু করে। তার প্রচেষ্টায় সংগঠনের শাখাগুলি নিউ ইয়র্ক (যুক্তরাষ্ট্র) সহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয়, যেমন— হরিদ্বার, ঋষিকেশ, গয়া, বৃন্দাবন, বারাণসী এবং পশ্চিমবঙ্গের নানা অঞ্চলে।
সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মুরল ভাই সততা, নিষ্ঠা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য সম্মানিত। তার ভক্তরা, যাদের “ভাই” বলা হয়, এবং আদ্যাপীঠ মন্দিরের ভক্তরা তাকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করেন। ধর্মীয় কাজের পাশাপাশি, তিনি মানবতাবাদের প্রচার করেছেন এবং কর্মযোগের দর্শনে বিশ্বাসী একজন “কর্মযোগী” হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।
তিনি রামকৃষ্ণ মিশনের ১০ম সভাপতি এবং শ্রী মা সারদা দেবীর শিষ্য স্বামী বিরেশ্বরানন্দ মহারাজের কাছ থেকে দীক্ষা গ্রহণ করেন। গুরুদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি আধ্যাত্মিকভাবে অগ্রসর হন এবং মানবতাবাদের প্রচারে নিজেকে নিয়োজিত করেন। তিনি লন্ডনের টয়নবি হলে ভারতীয় প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য দেন এবং যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত বিবেকানন্দ ফেস্টিভ্যাল ২০০০-এ অংশ নেন। বাংলাদেশেও মানবতাবাদের প্রচারে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং চট্টগ্রামে শাখা স্থাপন ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।
মুরল ভাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেছেন, যেমন— যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স এবং স্কটল্যান্ড, এবং মানবতাবাদ নিয়ে ভাষণ দিয়েছেন। তার বক্তব্য রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির (বেলুড় মঠ), রামকৃষ্ণ মিশন রাহারা, এবং রামকৃষ্ণ মিশন সারিশা-তে অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছে। জন্মাষ্টমী উপলক্ষে পুরুলিয়ায় জাতীয় সংহতি নিয়ে তার বক্তব্যও প্রশংসা পেয়েছে।
তার কর্মের জন্য মুরল ভাইকে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্থা থেকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। সিদ্ধার্থ ইউনাইটেড সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার মিশন তাকে সমাজের বঞ্চিতদের পুনর্বাসনে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মান জানিয়েছে। চন্দ্রনাথ-কাঞ্চননাথ-অদ্বিনাথ তীর্থ পরিচালনা কমিটি এবং সীতাকুন্ড তীর্থ কমিটি তাকে সমাজসেবার জন্য সম্মাননা প্রদান করেছে। কলকাতার প্রেস ক্লাবে বিপ্লবী সংবাদ দর্পণ এবং কল্যাণী, নদীয়ার বার্তা বাহক পত্রিকায় তার সেবাকর্মের জন্য তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। সম্প্রতি, দক্ষিণ কলকাতা সেবা উৎসব থেকে তাকে “সেবা রত্ন” পুরস্কার প্রদান করা হয়।
ভারত, বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তার আধ্যাত্মিক ও মানবতাবাদী কাজের উপর নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে, যা তাকে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি দিয়েছে।